বিএলআরআই হলো দেশীয় প্রজাতিসমূহের একটি জিন ব্যাংকঃ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা
আলী আহসান রবি
০১লা ডিসেম্বর, ২০২৪:
বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএলআরআই)-কে দেশীয় প্রজাতিসমূহের একটি জিন ব্যাংক উল্লেখ করে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা মিজ্ ফরিদা আখতার বলেছেন, বিদেশী জাতসমূহের অভিযোজনের পাশাপাশি দেশীয় জাতসমূহ সংরক্ষণেও বিএলআরআইকে ভূমিকা রাখতে হবে।
আজ সকালে সাভারে অবস্হিত বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটে সদ্য সমাপ্ত গবেষণাসমূহের ফলাফল ও অগ্রগতি পর্যালোচনার লক্ষ্যে “বার্ষিক গবেষণা পর্যালোচনা কর্মশালা-২০২৪”-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেছেন।
উপদেষ্টা বলেন, যেসব প্রজাতি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে, প্রয়োজন হলে বিএলআরআই হতে সেসব প্রাণী সংরক্ষণে রেড এ্যালার্ট জারি করতে হবে। পাশাপাশি তিনি দেশের কোন এলাকায় কোন প্রজাতির প্রাণিসম্পদ বেশি পাওয়া যায়, সে সংক্রান্ত একটি ম্যাপ প্রণয়নেও বিএলআরআইকে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, মাংস আমদানি হবে আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। বহু বিদেশী সংস্থা আমাদেরকে কম দামে মাংস আমদানির প্রস্তাব দেয়। তাদের এই প্রস্তাবের কারণে সরকারও অনেক সময় চাপে পড়ে যায়। কিন্তু দেশেই মাংস উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব। কেবল কোরবানিকেন্দ্রিক মাংসের বাজার বিবেচনা না করে সারা বছর কি পরিমাণ মাংসের চাহিদা থাকে তা বিবেচনায় নিয়ে কার্যক্রম গ্রহণ করতে হবে। মাংসের দাম কেনো বাড়ে তার কারণ খুঁজে বের করতে হবে বিএলআরআইকে। দেশীয় জাতসমূহের উন্নয়নের মাধ্যমে বিএলআরআই-কে উৎপাদনশীলতা বাড়াতে নির্দেশনা প্রদান করেন তিনি।
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ অভিঘাত মোকাবেলার নির্দেশনা দিয়ে তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে সাথে যুগোপযোগী গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে। আমাদের দেশীয় জাতসমূহ জলবায়ু পরিবর্তনের সাথে কতোটা খাপ খাইয়ে নিতে পারছে, সে সংক্রান্ত গবেষণা করতে হবে। পাশাপাশি মৌসুমভেদে প্রাণিজ আমিষের চাহিদা এবং এর সাথে সাথে প্রাণীদের উৎপাদনে কি ধরনের পরিবর্তন আসছে সে সংক্রান্ত গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে বাজারে নিয়ন্ত্রণ আনা সম্ভব হবে। এ সময় তিনি বিএলআরআই এর সক্ষমতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সরকার প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থা নেবে মর্মেও আশ্বস্ত করেন।
বিএলআরআই এর মহাপরিচালক ড. শাকিলা ফারুকের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এ.টি. এম মোস্তফা কামাল, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মোহাম্মদ রেয়াজুল হক। কর্মশালায় মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ, বিএলআরআই এর বিজ্ঞানীগণ, বিভিন্ন এলাকা থেকে আগত খামারিরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।