স্কুলের জায়গায় প্রধান শিক্ষকের বাড়ি! নিয়োগ নিয়েও রয়েছে অনিয়ম গুঞ্জন
লালপুর ( নাটোর) প্রতিনিধি:
লালপুরের বিলমাড়ীয়ায় একমাত্র নারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ৫০ বছর পাড়ি দিয়েছে । বর্ণাঢ্য আয়োজনে ৫০ বর্ষপূর্তি উৎসব হলো। উদ্ধার হয়নি প্রধান শিক্ষকের দখলে থাকা বিদ্যালয়ের জমি। স্থানীয় লোকজন জেলা শিক্ষা অফিসার ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে জমি উদ্ধারের আবেদন করেছেন।
সূত্রে জানা যায়, ১৯৭২ সালে বৃটিশদের পরিত্যক্ত ভবনে শহীদ মজিবর রহমান নিম্ন মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয় নামে জন্ম নিয়ে আইনি জটিলতায় বিলমাড়ীয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় নাম করণ হয়। এ বিদ্যালয়টি ৫০ বছর পাড়ি দিল । এখান থেকে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে পড়ছে দেশ বিদেশে। প্রতিষ্ঠাকালীন প্রধান শিক্ষক ছিলেন ফজিলাতুন্নেসা।
পরে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেছেন মরহুম মোকলেছুর রহমান। এখন মোঃ আব্দুল খালেক রয়েছেন প্রধান শিক্ষক।
৫০ বছরে পরিচালনা পর্ষদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন লালপুর – চারঘাট আসনের সাবেক এমপি মরহুম জিল্লুর রহমান , সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও লালপুর উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মরহুম হাজির উদ্দিন , এসডিও ইউনুছ আলী, বিলমাড়ীয়া
ইউনিয়নের সাবেক প্রেসিডেন্ট মরহুম হাজী আবু তাহের , সমাজসেবক মরহুম কিয়ামতুল্লা, সাবেক ইউএনও আবুল ফজল , সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জাতীয় পার্টির সাবেক সভাপতি মরহুম ফজলুর রহমান , সাবেক ইউএনও সাজেদুল ইসলাম , জামায়াত নেতা হাজি আনেজ উদ্দিন, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা কামরুজ্জামান খোকন সহ ১১ জন।
বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়টি অবস্থান বিলমাড়ীয়া মৌজার ৩৭ , ৩৮ ,৩৯ , ৪০ ,৪১ ,৪২ ,৪৩ ও ৪৫ নং দাগে , মোট জমি ১.৫০ একর।
বিদ্যালয়ের প্রাচীরের বাহিরে উত্তর পশ্চিমে নদীভাঙ্গা বেশ কয়েকটি পরিবার বসবাস করতো। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ( ২০০৭ – ২০০৮ ) তাদের উচ্ছেদ করা হলেও বর্তমান প্রধান শিক্ষক আব্দুল খালেক ৪৫ নং দাগের
১০ শতাংশ জমির অংশ নিজের দখলে রেখে পাকা বাড়ি নির্মাণ ও নিজস্ব রাস্তা হিসেবে ও ৪৩ নং দাগের ৬ শতাংশ মাঠিয়ালটিও ব্যবহার করছে বলে স্থানীয় সচেতন মহল জানিয়েছেন।
বর্তমান প্রধান শিক্ষকের নিয়োগ নিয়েও রয়েছে নানা গুঞ্জন। তৎকালীন সভাপতি কামরুজ্জামান খোকনের সাক্ষর জাল করে নিয়োগ নেন ।
লালপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ দুলাল আলম ০২/১২/ ১০ ইং তারিখে প্রধান শিক্ষক আব্দুল খালেকের জালিয়াতির মাধ্যমে ভূয়া নিয়োগের এমপিও স্থগিত করণ নিয়ে সোনালী ব্যাংক লালপুর শাখার ব্যবস্থাপক বরাবর বেতন না দেয়ার জন্য অনুরোধ করেন।
ফখরুদ্দিন – মইনুদ্দিনের আমলে বিদ্যালয়ের জমি থেকে অসহায় ভূমিহীনদের উচ্ছেদ করলেও প্রধান শিক্ষকের দখলে থাকা জমিতে নতুন বাড়ি করেছেন । বিদ্যালয়ের জমি নিজের বাড়ি ও আঙ্গিনা হিসেবে দখলে রেখে প্রতিষ্ঠার ৫০তম বছরে বর্ণাঢ্য আয়োজনে সুবর্ণ জয়ন্তী ও পূর্ণমিলনী উৎসব পালন করায় সচেতন মহলের মধ্যে নানা প্রশ্ন সৃষ্টি হয়েছে।
বিলমাড়িয়া বালিকা বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম , সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মরহুম আব্দুল বারির ছেলে প্রভাষক শরিফুল ইসলাম বলেন , অবৈধ ভাবে দখলে রাখা স্কুলের জমি হেড মাষ্টার দখল মুক্ত না করে সুবর্ণ জয়ন্তী পালন বেমানান হয়েছে।
বিদ্যালয়ের জমিতে বাড়ি ও নিয়োগ প্রসঙ্গে প্রধান শিক্ষক আব্দুল খালেকের কাছে জানতে চেষ্টা করলে মোবাইল রিসিভ করেননি।
লালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামীমা সুলতানা বলেন বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।