অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কথায় নয়, কাজে বিশ্বাসী- উপদেষ্টা শারমিন এস মুরশিদ
বিলাল হুসাইন,চিফ রিপোর্টার:ঢাকা, ৩ মে ২০২৫ :
সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কথায় নয়, কাজে বিশ্বাসী। আমরা পলিসি, অর্ডিন্যান্স করে যেতে চাই, আপনাদের সুচিন্তিত ভাবনাগুলোর আহবান করছি যাতে আমরা সকলেমিলে কাজগুলো করে যেতে পারি। তিনি বলেন, আমর মন্ত্রণালয় শুধু শিশু ও নারীর জীবনমান উন্নয়নে কাজ করে না, মানুষের সুরক্ষা, নিরাপত্তা, জীবনমান উন্নয়নসহ অসহায় মানুষের কল্যাণে এবং যাতে তারা নিরাপদ জীবন যাপন করতে পারে সে লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি আজ ঢাকায় গুলশানে স্থানীয় একটি হোটেলে বাংলাদেশে PFAS (Perfluoroalkyl and Polyfluoroalkyl Sulostances) দূষণ এবং জনস্বাস্থ্য নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।
আলোচনা অনুষ্ঠানে জাতীয় নদী সংরক্ষণ কমিশনের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে বর্জ্য ও রাসায়নিক ব্যবস্থাপনা বিভাগের পরিচালক রাজিনারা বেগম, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের বেসরকারি উপদেষ্টা এসএম সিদ্দিকী, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সাখাওয়াত হাসান জীবন, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, সাংস্কৃতিক ও সামাজিক কর্মী মেহেরীন মাহমুদ, ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশের সমন্বয়কারী শরীফ জামিল, দক্ষিণ এশিয়ার মোবিলাইজেশন সমন্বয়কারী আমানুল্লাহ পরাগ, ইকো- সোশ্যাল ডেভেলপমেন্টের প্রোগ্রাম উপদেষ্টা অটল কুমার মজুমদার, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াটারকিপার অ্যালায়েন্স এডভোকেসি ডিরেক্টর জাকি এসপোসিটো, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাইপ্রেস সিস্টেমস ইনকর্পোরেটেড টেকনিক্যাল অফিসার জাকি ইউসুফ, সিনিয়র ডেভেলপমেন্ট এক্সিকিউটিভ শহীদ জামিল, বাংলাদেশ ওয়াটারকিপার্সের সমন্বয়কারী শরীফ জামিল বক্তৃতা করেন।
অনুষ্ঠানে পরিবেশবিদগণও উপস্থিত ছিলেন।
উপদেষ্টা বলেন, বাংলাদেশে প্রচুর সম্পদ আছে, এটাকে সুরক্ষিত এবং সুব্যবহার করা বর্তমান সরকারের চ্যালেঞ্জ। রাষ্ট্র পর্যায়ে দুর্নীতি দেশদ্রোহিতার শামিল, কারণ এদেশের সম্পদ যথাযথভাবে ব্যবহার করা হয় না, ফলে পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরিবেশ ধ্বংস হয়ে গেলে তখন আর মানুষ সুরক্ষিত থাকে না। আমাদের দেশে অনেক নদী আছে, এগুলিকে সুরক্ষিত করতে হবে । সুরক্ষিত করতে পারলে নদীগুলোর প্রবাহ বয়ে যাবে এবং মানুষ সুপেয় পানি পান করতে পারবে এবং বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি পাবে।
তিনি বলেন, আমরা একটা ভালনারেবল জায়গায় দাঁড়িয়ে আছি। আপনারা যদি সকলেমিলে এ কাজে হাত না লাগাতে পারি, তাহলে আমরা বড়ভাবে সামাল দিতে পারবো না।
তিনি আরো বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জনগণকে সাথে নিয়ে নীতি তৈরি করতে চায়। নদী গবেষণায় এত বছরের গবেষণালব্ধ যে কাজগুলো হয়েছে সেগুলো বাইন্ডিং আকারে পড়ে থাকলে চলবে না, টেকনোলজি দিয়ে যে রিপোর্ট করা হয়েছে তা কেন এতদিন পরে থাকবে, আমাদের মেধা দিয়ে বারবার কেন সময় নষ্ট করব।
তিনি বলেন, এই PFAS হলো মানব এবং পরিবেশের জন্য বিষাক্ত রাসায়নিক বর্জ্য । এ বিষাক্ত রাসায়নিক বর্জ্য দূষণ বন্ধ করতে এবং জনস্বাস্থ্য রক্ষার জন্য দ্রুত সরকারের কাছে নীতি তৈরি করে প্রস্তাবনা তুলে ধরতে হবে। যাতে নদীরক্ষা, জনগণ এবং বাংলাদেশের ভবিষ্যতের জন্য সরকার এখনই পদক্ষেপ নিতে পারে।
উল্লেখ্য, PFAS ফরএভার কেমিক্যাল নামেও পরিচিত। চামড়া ও টেক্সটাইল খাত রাসায়নিক পদার্থ নির্গত করে,যা পানি ও মাটি দূষিত করে। ঢাকা, গাজীপুর এবং নারায়ণগঞ্জের কাছে নেওয়া নদীর পানির নমুনা অত্যন্ত দূষিত।
বাংলাদেশে PFAS দূষণ ক্রমবর্ধমান একটি বিপদ। এটি মানুষের স্বাস্থ্য ও পরিবেশের ক্ষতি করে। বেশিরভাগ PFAS পোশাক কারখানার অন্তর্ভুক্ত। সহজ এবং সাশ্রয়ী পদক্ষেপের মাধ্যমে এগুলি বন্ধ করা যেতে পারে। নদীর এই বর্জ্য নির্গতের ফলে কারখানার কাছাকাছি নিম্ন আয়ের মানুষ দূষিত পানি পান করার ফলে ক্যান্সার, লিভারের ক্ষতি, থাইরয়েড সমস্যা এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার ক্ষতির মতো গুরুতর স্বাস্থ্য ঝুঁকির সাথে যুক্ত এই PFAS রাসায়নিক পদার্থ।