মোহাম্মদ এরশাদ বাঁশখালী প্রতিনিধি
বাবা ছেলের মধ্যকার সম্পর্ক যেন এক অটুট বন্ধন। বাবা-ছেলের সম্পর্কের বাইরেও তাদের রয়েছে দুজনের অভাবনীয় বন্ধুত্ব। এক সঙ্গে চলছেন, ফিরছেন, গল্প করছেন আর আগামী সুন্দর পরিকল্পনা বুনছেন। এক সঙ্গে পায়ে হেটে আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন। এ বাবা-ছেলে হলেন গাইবান্ধা শহরের বাসিন্দা সাদেক আলী সরদার (৬৭) এবং তার ছেলে মোস্তাফিজুর রহমান (৩৭)।
গত ২০ নভেম্বর সন্ধ্যা ৬.৪০ মিনিটে আলোকিত বাংলার স্বপ্নযাত্রা, আমরা করবো জয়’ শ্লোগানে বাংলাবান্ধা জিরোপয়েন্ট থেকে পতাকা হাতে নিয়ে পায়ে হেটে যাত্রা শুরু করেছেন এ যুগল বাবা-ছেলে। ১ হাজার কিলোমিটার হেটে পাড়ি দিবেন টেকনাফে। এ হাটা সফল হলে তাদের অংকে যোগ হবে ২ হাজার ৬৩৯ কিলোমিটার।
৫০তম মিশন হিসেবে তারা তেঁতুলিয়া থেকে টেকনাফ পায়ে হেটে ভ্রমন করছেন। এ মিশনে হাটবেন ১ হাজার কিলোমিটার। এর আগে তারা ৪৯তম মিশনে পদযাত্রা করেছেন ১ হাজার ৬২৪ কিলোমিটার। গাইবান্ধা থেকে বাংলাবান্ধা জিরোপয়েন্ট পর্যন্ত টানা ২শ ২৬ কিলোমিটার হেঁটে যাওয়াসহ সিলেট থেকে জাফলং পর্যন্ত ৫০ কিলোমিটার পথ ভ্রমণ করেছেন। ৫০তম মিশনের পথ ভ্রমণ করতে তাদের ২০ দিনের মতো লাগবে।
২০২১ সালের ১৪ ডিসেম্বর নিজ জেলা গাইবান্ধার সাদেক চত্বর থেকে স্থানীয় ফুলছড়ি থানা পর্যন্ত ২৮ কিলোমিটার হাঁটা দিয়ে শুরু হয় পায়ে হেটে ভ্রমণ। পর্যায়ক্রমে নিজ জেলা থেকে বগুড়া, রংপুর, দিনাজপুর, ঘোড়াঘাট-হিলি, পঞ্চগড়-বাংলাবান্ধাসহ বেশ কিছু এলাকায় হেটে সেখানকার দর্শনীয় স্থান, ইতিহাস-ঐতিহ্য দর্শন করেন তারা।
বাবা সাদেক আলী সরদার গাইবান্ধা শহরের বাসিন্দা। তিনি ২০০০ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী থেকে অবসর নেন। সেনাবাহিনীতে চাকরির সুবাদে শরীর চর্চা থাকায় স্বপ্ন দেখেন হেটে বেড়াবেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তর। ভাবা থেকেই শুরু করেন হেঁটে চলার অভ্যাসের অনুশীলন। বাবার সফর সঙ্গী হয়ে উঠেন ছেলে মোস্তাফিজুর রহমানও।
সাদেক আলী সরদার বলেন, ‘সেনাবাহিনীতে চাকরি করেছি। সে চাকরি জীবনে হেঁটে বেড়ানোর তো অনুশীলন ছিল। সে অনুশীলনের অভ্যাসেই মনে হলো সারাদেশ হেঁটে বেড়িয়ে দেখব। ইতোমধ্যে অনেক পথ হেঁটেছি। এখন তেঁতুলিয়া থেকে টেকনাফ যাত্রা শুরু করেছি। এর থেকে আরও লম্বা পথ পায়ে হেঁটে বেড়ানোর স্বপ্ন রয়েছে।’
বাবার ভ্রমণসঙ্গী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘বাবার স্বপ্ন ছিল হেঁটে দেশ ঘুরে বেড়াবেন। বাবার স্বপ্নপূরণে আমিও সফর সঙ্গী হয়েছি। ৫০তম মিশন হিসেবে আমরা তেঁতুলিয়া থেকে টেকনাফ পর্যন্ত হেঁটে যাত্রা শুরু করেছি। আমরা ইতোমধ্যে এক হাজার ৬২৪ কিলোমিটার পথ হেঁটেছি। আমরা যেন এ মিশনও সফল করতে পারি। এ জন্য দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই।