পটুয়াখালী প্রতিনিধি:
প্রিয়ন্তি হাওলাদার বর্না নামের এক মহিলার বিরুদ্ধে তথ্য গোপন, মিথ্যা ও অসত্য তথ্য দিয়ে “সিএইচসিপি” পদে নিয়োগ পরিক্ষায় অংশ গ্রহনের অভিযোগ এনে সহকারী জজ আদালতে মামলা দায়ের করেছে ওই পরিক্ষায় অংশ গ্রহনকারী মো. জহিরুল ইসলাম ও আল আমিন নামের দুই প্রার্থী।
জানা যায়, স্বাস্থ্য বিভাগের সিএইচসিপি পদে পরিক্ষা সরকারি বিধি মোতাবেক ১১ নভেম্বর ২০২২ ইংরেজি তারিখ খুলনায় নিয়োগ পরিক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। লিখিত পরিক্ষায় গলাচিপার ১১নম্বর চর-কাজল ইউনিয়ন সিএইচসি পদে প্রিয়ন্তি হাওলদার বর্না, আল আমিন ও জহিরুল ইসলাম উত্তীর্ন হয়। লিখিত পরিক্ষায় উত্তীর্ন প্রিয়ন্তি হাওলদার বর্না গলাচিপা উপজেলার রতনদীতালতলি ইউনিয়নের কাচারিকান্দা গ্রামের বাবুল চন্দ্র হাওলাদাদের মেয়ে।
কিন্তু স্থায়ী বাসিন্দা আল আমিন ও জহিরুল ইসলাম কারোর নিয়োগ না হয়ে প্রিয়ন্তি হাওলদার বর্না ওই পদে নিয়োগ লাভ করে। পরে তার সকল তথ্য সংগ্রহ করে জানা যায় প্রিয়ন্তি হাওলদার বর্না নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে স্থায়ী বাসিন্দা না হয়েও প্রকৃত তথ্য গোপন রেখে ভূল তথ্যের মাধ্যমে ওই পদে নিয়োগ পেয়েছেন। যার জন্য বিধি অনুযায়ী অংশ গ্রহনকারী ২জন চাকুরী পাওয়া থেকে বঞ্চিত হয়।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ৫এপ্রিল/২২ তারিখ নিয়োগ বিঞ্জপ্তি মোতাবেক পটুয়াখালীর গলাচিপা থানার বড় চর-কাজল গ্রামে কমিউনিটি হেল্থ কেয়ার প্রোভাইডার পদের জন্য আল আমির ও জহিরুল ইসলাম আগ্রহী প্রার্থী হিসেবে আবেদন করেন এবং তাদের আবেদন গ্রহন হয়। যথারিতি নির্দেশ মোতাবেক নির্ধারিত তারিখের পরীক্ষায় অংশ গ্রহন করেন। সিএইচসিপি নিয়োগ পরিক্ষায় আল আমিন ও জহিরুল ইসলাম উত্তীর্ন হয়।
প্রিয়ন্তি হাওলদার বর্না ৫এপ্রিল/২২ তারিখ নিয়োগ বিঞ্জপ্তির বিষয় অবগত হইয়া তাহার স্বামী স্বামী রনজিৎ চন্দ্র মিত্র বিধানের সহিত ষড়যন্ত্র করিয়া চর-কাজল সাকিনের আদৌ বাসিন্দা না হওয়া সত্যেও এবং চর কাজল সাকিনে কিংবা চর কাজল ইউনিয়নে প্রিয়ন্তি হাওলদার বর্না ও তার স্বামী স্বামী রনজিৎ চন্দ্র মিত্র বিধানের আদৌ কোন বাড়ি-ঘর, খানা ও ভোটার তালিকা না থাকা সত্যেও সিএইচসিপিতে আবেদন করেন। গলাচিপা সহকারী জজ আদালতে ২৪ নভেম্বর-২২ আল আমিন ও জহিরুল ইসলাম বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন যার মামলা নম্বর ৫৯৬/২২।
আদালতের বিঞ্জ বিচারক সন্তুষ্ট হয়ে ২জানুয়ারী-২৩ শুনানির দিনধার্য করেছে।
প্রিয়ন্তি হাওলদার বর্না’র স্বামী রনজিৎ চন্দ্র মিত্র বিধান(০১৭১৯৯৭২৫৮০) জানান, চর কাজল ইউনিয়নে আমাদের জমাজমি আছে এমন কি আমার বাবার মামা বাড়ি। চর কাজল ইউনিয়নে আমার খানা আছে।
এ ব্যাপারে অভিযোগকারী আল আমিন ও জহিরুল ইসলাম(০১৭১৯৬১৬১৭৫) জানান, প্রিয়ন্তি হাওলাদার বর্না চর কাজল ইউনিয়নের কোন বাসিন্দা কিংবা এখানের তার স্বামীর বাড়িও না। তিনি সকল তথ্য গোপন করে সিএইচসিপি’র পরিক্ষায় অংশ গ্রহন করেন। তার জাতীয় পরিচয় পত্রে রতনদী তালতলী ইউনিয়নের কাচারিকান্দা গ্রামে স্থায়ী ঠিকানা আর ওই ইউনিয়নের মানিকচাঁদ গ্রামে বর্তমান ঠিকানা লিপি বন্ধ রয়েছে।
তার জাতীয় পরিচয় পত্রের নম্বর ৫০৯৩৭০০২৩৪। তারা আরো বলেন,তথ্য গোপন ও অসত্য তথ্য দিয়ে পরিক্ষায় অংশ গ্রহনের বিরুদ্ধে সরেজমিনে তদন্ত পূর্বক ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানান তারা।
এ ব্যাপারে রতনদী তালতলী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফা
খান(০১৭৩৪৯১০৮৭) জানান, আমার জানা নেই মেম্বার কাছে জানতে হবে।
এ ব্যাপারে চর-কাজল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো.হাবিবুর রহমান (০১৭১০৫৬৬৮৬২জানান, প্রিয়ন্তি আর তার স্বামী এ ইউনিয়নের কোন স্থায়ী বাসিন্দা না। তবে প্রিয়ন্তির চাকরির সুবাধে চর কাজল ইউনিয়নের ৫নম্বর ওয়ার্ডে ভোটার আইডি স্থানন্তর ও খানা করেছে।
এ ব্যাপারে গলাচিপা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা কাজী আব্দুল মমিন(০১৮১৫৪৮২১৪) জানান, অনুলিপি কপি হাতে পেয়ে লোকাল কমিটি গঠন করেছি তদন্ত প্রতিবেদন আসুক।এ ব্যাপারে পটুয়াখালী সিভিল সার্জন ডা. এসএমকবির হাসান (০১৭১২২৩১০৮৮)জানান, অভিযোগের কপি হাতে পেয়েছি আর উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরন করা হয়েছে।এ ব্যাপারে খুলনা সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদ (০১৭৮৯৩৫৬৪৮৪)জানান, অভিযোগের কপি হাতে পাইনি তবে আমারা শুনেছি কিন্তু আমাদের উর্ধ্বতন কর্তূপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করতে পারেন।
এদিকে, এ ব্যাপারে ১৪নভেম্বর-২২ তারিখ পরিচালক (স্বাস্থ্য) খুলনা বিভাগ ও আহ্বায়ক কমিউনিটি বেইজ হেল্থ কেয়ার খুলনা ও বরিশাল এবং ১৫নভেম্বর-২২তারিখ সিভিল সার্জন খুলনা ও ১৬নভেম্বর-২২ তারিখে লাইন ডাইরেক্টর সিবিএইচসি (বিএমআরসি ভবন মহাখালী ঢাকা) এর বরাবর অভিযোগ দায়ের করেন। এরপরে ১৯নভেম্বর-২২ তারিখ স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা গলাচিপা ও ২২নভেম্বর-২২ তারিখ সিভিল সার্জন পটুয়াখালী অনুলিপি প্রেরন করা হয়।