নিজস্ব প্রতিবেদক:
কনকনে শীত উপেক্ষা করে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হাজার হাজার পর্যটক দর্শনার্থীরা এসে ভীড় জমিয়েছে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে। আগত পর্যটকরা শীতের হিমেল হওয়ার মাঝেও আনন্দ উল্লাসে মেতে ওঠে। কুয়াশার চাদরে আকাশ ঢেকে থাকায় কাঙ্ক্ষিত সূর্যোদয় সূর্যাস্তের মত বিরল দৃশ্য অবলোকন থেকে বঞ্চিত হয়েছে পর্যটকরা।
বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে পর্যটকরা কুয়াকাটায় আসতে শুরু করে। শুক্রবার দিনভর পর্যটকদের আনাগোনা ছিল চোখে পড়ার মত। নভেম্বর থেকে পর্যটন মৌসুম শুরু হলেও রাজনৈতিক অস্থিরতায় দীর্ঘদিন পর্যটক শূন্য ছিলো কুয়াকাটা সৈকত।
বছরের শুরু থেকে তেমন একটা পর্যটক না আসলেও আজ শুক্রবার হাজার হাজার পর্যটক দর্শনার্থীদের ভীড়ে মুখর হয়ে ওঠে সাগরকন্যা কুয়াকাটা।
আগত পর্যটকরা সমুদ্রের নোনা জলে গাঁ ভাসিয়ে আনন্দ উল্লাসে মেতে ওঠে। সৈকতের বালিয়াড়িতে আল্পনা একে তা আবার ক্যামেরা বন্দী করতে দেখা গেছে অনেককেই। অনেকে বেঞ্চিতে বসে উপভোগ করছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। কেউবা আবার ঘুরছেন ঘোড়ায় কিংবা ওয়াটার বাইকে। আগতরা কুয়াকাটার কুয়া, শ্রী মঙ্গল বৌদ্ধ বিহার, মিশ্রীপাড়া সীমা বৌদ্ধ বিহার, রাখাইন পল্লীসহ ঘুরে বেড়িয়েছেন দর্শনীয় স্পট সমুহ। বুকিং রয়েছে অধিকাংশ হোটেল মোটেলের কক্ষ। বিক্রি বেড়েছে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে। এতে অনেকটা উচ্ছসিত ব্যবসায়ীরা। আগতদের সার্বিক নিরাপত্তায় ট্যুরিষ্ট পুলিশ তৎপর ছিল।
টাঙ্গাইলের মির্জাপুর থেকে আগত জহিরুল ইসলাম সেলিম বলেন, আমরা পরিবার নিয়ে কুয়াকাটায় ভ্রমণে এসেছি। প্রচন্ড ঠান্ডা উপেক্ষা করে কুয়াকাটায় এসে পৌছেছি। তবে এখানে এসে দেখলাম ঠান্ডা কম। হিমেল হওয়ায় ঘুরে বেড়াতে খুব ভালোই লাগছে।
যশোর থেকে ভ্রমণে আসা জুনায়েদ সিদ্দিকী জানান, তারা কয়েকজন বন্ধু মিলে বৃহস্পতিবার বিকেলে কুয়াকাটায় এসেছেন। এখানে একটু ঠান্ডা কম থাকায় ঘুরতে খুব ভালো লেগেছে। তবে কুয়াশার কারনে সূর্যোদয় সূর্যাস্ত দেখতে না পেরে হতাশ হয়েছি।
সৈকতের ভ্রাম্যমান আচার বিক্রেতা শাহ আলম জানান, চলতি মাসে তেমন একটা পর্যটক ছিল না। গতকাল বৃহস্পতিবার থেকে সৈকতে প্রচুর সংখ্যক পর্যটকদের আগমন ঘটে। এতে তার বেচাবিক্রি খুব ভালো হয়েছে।
ঝিনুক ব্যবসায়ী মিলন জানান, গত কয়েক মাসের মধ্যে আজ শুক্রবার অনেক পর্যটকদের আগমন হয়েছে। বেচাকেনা ভালো হয়েছে।
আবাসিক হোটেল সৈকতের জেনারেল ম্যানেজার আবজাল গাজী জানান, বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত তাদের হোটেলের ৯০ ভাগ রুম বুকিং রয়েছে। তিনি আরো জানান, এভাবে সব সময় পর্যটক থাকলে গত কয়েক মাসের ঘাটতি কাটিয়ে লাভের মুখ দেখবেন এমনটাই আশা করছেন তিনি।
কুয়াকাটা হোটেল মোটেল এমপ্লয়িজ এসোসিয়েশনের সভাপতি মোঃ ইব্রাহিম ওয়াহিদ জানান, চলতি বছরের মধ্যে রেকর্ড পরিমাণ পর্যটক দর্শনার্থীদের আগমন ঘটেছে। আগত পর্যটকদের সেবা দিতে তারা যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন।
কুয়াকাটা হোটেল মোটেল ওনার্স এসোসিয়েশন সাধারণ সম্পাদক মোতালেব শরীফ বলেন, চলতি বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পর্যটকদের আগমন হয়েছে এই শুক্রবার। প্রথম শ্রেণির আবাসিক হোটেল গুলোর ৮০ ভাগ কক্ষই বুকিং রয়েছে।
ট্যুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা রিজিওনের পুলিশ সুপার মোঃ আবুল কালাম আজাদ বলেন, প্রচন্ড ঠান্ডা উপেক্ষা করে আজ ছুটির দিনে অনেক পর্যটক এসেছে। আগত পর্যটকদের নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিতে ট্যুরিস্ট পুলিশ সার্বক্ষণিক নজর রেখেছে। পাশাপাশি থানা পুলিশও বিশেষ নজর রাখছেন।