ভোলার মেঘনায় ভাঙন রোধে চলতি মাসেই শেষ হচ্ছে জিও ব্যাগ ডাম্পিং
সাব্বির আলম বাবু, বিশেষ প্রতিনিধিঃ
চলতি মাসেই শেষ হচ্ছে ভোলা সদর উপজেলার পূর্ব ইলিশা ইউনিয়নের দালাল বাজার সংলগ্ন ভাংতির খালের নদীর ভাঙন প্রবণ এলাকার তীর সংরক্ষণ জিও ব্যাগ ডাম্পিং এর কাজ। প্রায় ৪০০ মিটার এলাকা জুড়ে এখন চলছে শেষ মুহূর্তের কর্মজজ্ঞ।
সামনে বর্ষা মৌসুমে প্রমত্তা মেঘনার হাত থেকে ভোলাকে রক্ষার জন্য দ্রুত নদীতে ডাম্পিং করা হচ্ছে। এ নিয়ে স্থানীয় জনগন খুবই সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নদীর পাড়েই তৈরি করা হচ্ছে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ। পরে তা স্থাপন করা হচ্ছে তীর রক্ষার জন্য।এমন দৃশ্য ভাংতির খাল থেকে ৪০০ মিটার পর্যন্ত। এসব এলাকার অন্তত ৫ টি গ্রামে দীর্ঘদিন ধরেই ধীরগতিতে মেঘনার ভাঙন চলছিল। নদী ভাঙন রোধে ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ডে(পাউবো)’র তত্বাবধানে শ্রমিকরা এখন জিও ব্যাগ ডাম্পিং নিয়ে ব্যস্ত।যা চলতি মাসে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। স্থানীয়রা বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) কর্মকর্তাগণ তদারকি করছেন প্রতিনিয়ত। তাছাড়া কাজের মান নিয়েও সন্তোষ প্রকাশ করেন এলাকবাসী।
সূত্রে জানা গেছে, প্রতি বছর মেঘনার ভাঙনে ভোলা সদর উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। ভাঙনে অনেকে বাড়িঘর হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। হারিয়ে গেছে ভোলা সদর উপজেলার কয়েকটি গ্রামের মানচিত্র। নদী ভাঙনরোধে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জরুরি ভাঙনরোধ প্রকল্পের আওতায় ভোলার মেঘনা নদীর পূর্ব ইলিশার ২নং ওয়ার্ডের দালাল বাজার সংলগ্ন ভাংতির খাল এলাকায় জিও ব্যাগ দিয়ে ৪০০ মিটার নদী তীর সংরক্ষণের জন্য চট্টগ্রামের ঠিকাদার মেসার্স গরীবে নেওয়াজ এন্টার প্রাইজ প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে প্রায় ১ কোটি ৭৩ লাখ টাকার চুক্তি করে। পরবর্তীতে এই কাজটি মূল ঠিকাদারের কাছ থেকে নিয়ে মাঠ পর্যায়ে বাস্তবায়ন করছেন ভোলার ঠিকাদার মোঃ ইকবাল হোসেন। চুক্তি অনুযায়ী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ৪২ হাজার ৬১৫টি জিও ব্যাগে ২৫০ কেজি প্রকৃত মোটা বালি ফেলে ডাম্পিং করছে। এখন চলছে জিও ব্যাগে বালু ভরাট ও ডাম্পিং এর কাজ। সম্প্রতি প্রকল্প এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, একদল শ্রমিক জিও ব্যাগ ভরছেন আর একদল শ্রমিক জিও ব্যাগের বস্তার মুখ সেলাই করে ডাম্পিং করছেন।
কাজের সার্বক্ষণিক দায়িত্বে থাকা পানি উন্নয়ন বোর্ডের কার্য সহকারী মো. হুমায়ুন বলেন, বর্ষায় নদী ভাঙনরোধে দ্রুত ডাম্পিং এর কাজ এগিয়ে চলেছে। জিও ব্যাগের ওজন এবং কাজের গুনগত মান ঠিক রেখে ডাম্পিং এর কাজ চলমান রয়েছে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স গরীবে নেওয়াজ এন্টার প্রাইজের ভোলার প্রতিনিধি মোঃ ইকবাল হোসেন বলেন, চুক্তি অনুযায়ী কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। কাজের কোনো সমস্যা নেই, ঠিকঠাক মতো হচ্ছে। তাছাড়া পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) আমাদের কাজে সার্বক্ষণিকভাবে মনিটরিং করছে। আশা রাখি মেয়াদের মধ্যে বাকী কাজ সম্পন্ন করতে পারবো।
ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)’র উপ-সহকারী প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম বলেন, জিও ব্যাগের বস্তা সঠিক ওজন দিয়ে এবং গণনা করে নদীর পার সংরক্ষণে ডাম্পিং করা হচ্ছে। ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)’র নির্বাহী প্রকৌশলী ম. হাসানুজ্জামান বলেন, দালাল বাজার সংলগ্ন ভাংতির খাল এলাকায় ৪০০ মিটার জিও ব্যাগ ডাম্পিং করা হচ্ছে। আমরা শত ভাগ কাজ বুঝে ডাম্পিং করছি। তাছাড়া ঢাকা থেকে টাস্কফোর্স সদস্যরা এসে কাজের দেখভাল করছেন। আশা করছি যথাসময়ে কাজটি শেষ করতে পারলে ভাঙনের হাত থেকে মেঘনার দালাল বাজার সংলগ্ন বানবাসী মানুষ দুর্যোগ থেকে রক্ষা পাবেন।