সমন্বিত কার্যক্রমের মাধ্যমে সুস্থ জাতি গঠনে প্রকল্পের সাথে সংশ্লিষ্টদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনে আন্তরিকতার সাথে কাজ করার আহ্বান -উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ
বিলাল হুসাইন,চিফ রিপোর্টার: ঢাকা ,১৫ এপ্রিল ২০২৫ :
মহিলা ও শিশু বিষয়ক এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেছেন, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ শিশু একাডেমী কর্তৃক বাংলাদেশের ১৬ টি জেলার ৪৫টি উপজেলায় ‘ সমাজ ভিত্তিক সমন্বিত শিশুযত্ন কেন্দ্রের মাধ্যমে শিশুর প্রারম্ভিক বিকাশ ও সুরক্ষা এবং সাঁতার সুবিধা প্রদান’ ( আইসিবিসি) শীর্ষক প্রকল্পের মাধ্যমে সুরক্ষিত পরিবেশে শিশুরদের নির্ভয়ে বেড়ে ওঠার পরিবেশ নিশ্চিতে এ প্রকল্পটি কর্মসূচি বাস্তবায়ন করছে।
তিনি আজ হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে সমাজভিত্তিক সমন্বিত শিশুযত্ন কেন্দ্রের মাধ্যমে শিশুর প্রারম্ভিক বিকাশ ও সুরক্ষা এবং সাঁতার সুবিধা প্রদান প্রকল্পের বেজলাইন জরিপ ও নলেজ , অ্যাটিচুড ও প্র্যাকটিস এনালিসিস সার্ভে শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় একথা বলেন।
সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মমতাজ আহমেদ এনডিসি, গ্লোবাল অর্গানাইজেশনের সিনারগোস এর কান্ট্রি ডিরেক্টর এশা হুসেইন, ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রপিস এর জনস্বাস্থ্য বিভাগের পরিচালক কেলি লারসন এবং বাংলাদেশ শিশু একাডেমীর মহাপরিচালক দিলারা বেগম বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন প্রকল্প পরিচালক ও যুগ্ম সচিব আব্দুল কাদের। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন উপ-নির্বাহী পরিচালক ড. আমিনুর রহমান।
সেমিনারে নীতি নির্ধারক প্রতিনিধি, পানিতে ডুবা প্রতিরোধ কার্যক্রম বাস্তবায়নকারী প্রকল্পের প্রতিনিধি, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধি, কমিউনিটি প্রতিনিধি, গণমাধ্যম প্রতিনিধি ও শিশুদের জন্য কাজ করে এমন দেশি এবং আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।
উপদেষ্টা বলেন, শিশুদের সার্বিক কল্যাণ সরকারের অন্যতম লক্ষ্য । তিনি বলেন, শিশুর সামগ্রিক বিকাশ, যত্ন ও সুরক্ষা নিশ্চিত করা, তাদের শারীরিক, মানসিক বিকাশের লক্ষ্যে যাবতীয় সেবাসমূহ নিশ্চিত করা, এক থেকে পাঁচ বছরের শিশুদের চাইল্ড কেয়ারে এবং ছয় থেকে দশ বছরের শিশুদের সাঁতার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা এবং শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা ও জীবন মানের উন্নয়ন, এছাড়াও শিশু যত্ন কেন্দ্রের সাথে সম্পৃক্ত অভিভাবকদের জীবনমান উন্নয়ন সাধন নিশ্চিত করতে সরকার বদ্ধপরিকর ।
তিনি আরো বলেন, দুর্ঘটনা সমীক্ষায় বিশেষ বিষয় হিসেবে যখন দেখা যায় বাংলাদেশে ১ থেকে ৯ বছরের শিশুদের মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ পানিতে ডুবে মৃত্যু। এই সমীক্ষায় প্রাপ্ত তথ্যে বলা হয় যে, বাংলাদেশের ৫ বছরে কম বয়সী শিশুদের মৃত্যুর সবচেয়ে বড় ঝুঁকি পানিতে ডুবে মারা যাওয়া। এই মৃত্যুর ঘটনাগুলো ঘটে সাধারণত বাড়ির ২০ মিটারের মধ্যে অবস্থিত জলাধারে এবং দিনের প্রথম ভাগে। গ্রামাঞ্চলে পানিতে ডুবে মারা যাওয়ার এই হার শহরের চাইতে বেশি, যার সম্ভাব্য কারণ হতে পারে যে সেখানে পুকুর আর ডোবার মত ছোট ছোট জলাধারের সংখ্যা বেশি। এজন্য ৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের জন্য ৮০০০ টি সমাজভিত্তিক সমন্বিত শিশু যত্ন কেন্দ্র স্থাপন এবং পরিচালনা করা। ২ লাখ শিশুকে এই প্রকল্পের আওতায় সেবা প্রদান করা হবে। ৬ থেকে ১০ বছরের শিশুদের জন্য ১৬০০ টি ভেনুতে সাঁতার শেখানো হবে। নিরাপদ ও সাশ্রয়ী শিশু-যত্ন প্রদানের ক্ষেত্রে সুস্পষ্ট ভূমিকা পালনের বাইরেও কেন্দ্রগুলো শিশুদের পাশাপাশি তাদের মা-বাবাদের জন্য শিক্ষার কেন্দ্র হয়ে উঠবে, খেলার মাধ্যমে ভালোভাবে শেখা, ভালো অনুশীলন গুলোকে সংগ্রহ করে ছড়িয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। এটি শিশুদের মানসিক বিকাশ, সামাজিক বিকাশ , স্বাস্থ্যবিধি ও পুষ্টি বিষয়ক উন্নয়নের মাধ্যম হিসেবে কাজ করবে। সমন্বিত কার্যক্রমের মাধ্যমে সুস্থ জাতি গঠনে প্রকল্পের সাথে সংশ্লিষ্টদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনে আন্তরিকতার সাথে কাজ করার আহ্বান জানান।