সাবেক প্রতিমন্ত্রী মাহবুব সহ ৪জনের বিরুদ্ধে দুদককে তদন্তের নির্দেশ
নিজস্ব প্রতিবেদক : পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় সাবেক প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুবুর রহমান সহ ৪ জনের বিরুদ্ধে এবার খেপুপাড়া সরকারী মোজাহার উদ্দিন বিশ্বাস কলেজের ১০ কোটি টাকার সম্পদ ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ দুদক, মহাপরিচালক (অনুসন্ধান ও তদন্ত), সেগুন বাগিচা, ঢাকাকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
পটুয়াখালী সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের বিচারক (ভারপ্রাপ্ত) একেএম এনামুল করিম মঙ্গলবার (৪এপ্রিল) এ আদেশ প্রদান করেন। আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. শাহআলম, প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো: নুরুল ইসলাম ও বাদী পক্ষের নিযুক্তীয় কৌশুলী অ্যাডভোকেট সহিদুর রহমান এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে কলেজের শিক্ষার্থী মো. মিজানুর রহমান ২২ মার্চ সাধারন শিক্ষার্থীদের পক্ষে জনস্বার্থে বাদী হয়ে পটুয়াখালী সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে সাবেক প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুবুর রহমান, সাবেক অধ্যক্ষ দোলোয়ার হোসেন, অধ্যক্ষ লিয়াকত মোল্লা, উপজেলা মাধ্যমিক একাডেমিক সুপারভাইজার সহ ৪ জন ও অজ্ঞাত নামা ৮/৯ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা ও দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের ২৭ ধারায় মামলা দায়ের করেন।
মামলার বিবরনে বলা হয়, কলেজের উন্নয়নে ২০১৩, ২০১৪ সালে পিআইও অফিস ও ডিসি অফিস থেকে সরকারী অনুদান প্রাপ্ত ১ লক্ষ ৬৯ হাজার টাকা, কলেজ উপাধ্যক্ষ বাসগৃহের অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করন প্রকল্পে ২০১৩-২০১৪ অর্থ বছরে জেলা পরিষদ, পটুয়াখালী থেকে বরাদ্দকৃত ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা, অধ্যক্ষ কোয়াটার মেরামত ও সংস্কার প্রকল্পে বরাদ্দকৃত ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা, কলেজে অডিটোরিয়াম নির্মাণের জন্য ২০ লক্ষ টাকার কাজে অনিয়ম, কলেজের শ্রেনিকক্ষ উন্নয়ন ও আসবাবপত্র মেরামত ও সংস্কারের ২ টন চাল, কলেজ জামে মসজিদ, ছাত্রাবাস, ছাত্রাবাস কিচেন ও শিক্ষক ম্যাচ সংস্কার এবং মেরামত প্রকল্পের জেলা পরিষদের বরাদ্দকৃত ৪ লক্ষ সরকারী অনুদানের টাকা আসামীরা আত্মসাত করেছেন।
এছাড়া পত্রিকায় নিলাম বিজ্ঞপ্তি না দিয়ে ৩ তলা বিশিষ্ট সাইক্লোন সেন্টার ও দ্বিতল টিন সেট ব্যবহার যোগ্য অধ্যক্ষ কোয়াটার বিক্রী করে ১৭ লক্ষ টাকা, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা কেন্দ্র ফি’র ৩ লক্ষ ৯৪ হাজার টাকা, অনার্স শাখার বিভিন্ন বিভাগের ৪০ লক্ষ টাকা আসামীরা দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে আত্মসাত করেছেন।
মামলায় আরও বলা হয়, কলেজের কৃষি জমি একসনা লিজ প্রদানের মাধ্যমে ও কলেজের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে আদায়কৃত প্রকৃত অর্থ ব্যাংকে জমা না দিয়ে আংশিক জমা দিয়ে অধিকাংশ অর্থ হাতে রেখে আসামীরা এ পর্যন্ত প্রায় ১ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। আসামীরা পরস্পর যোগসাজশে অবৈধ অনৈতিক সুবিধা নিয়ে ঘুষ দুর্নিতির মাধ্যমে কলেজে নিয়োগ বানিজ্য করে কাম্য যোগ্যতা না থাকার পরও জাল সনদে অনেক ব্যাক্তিকে চাকরি দিয়েছেন।
যা মাউশি ও শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের তদন্তের প্রতিবেদন সহ জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয় এর প্রতিবেদনে নিয়োগ সংক্রান্ত অনিয়মের সকল বিষয় স্পষ্ট করা হয়েছে। এভাবে আসামীরা অজ্ঞাত আরও ৮/৯ জন আসামীর পরস্পর যোগসাজশে সরকারি মোজাহার উদ্দিন বিশ্বাস কলেজের প্রায় ১০ কোটি টাকার সম্পদ ও অর্থ আত্মসাত করেছেন।
এর আগে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনে সাবেক প্রতিমন্ত্রী মাহবুবের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে ঢাকা বিভাগীয় বিজ্ঞ স্পেশাল জজ আদালত, মামলা নম্বর ০৮/২০১৫। এছাড়া খেপুপাড়া কেন্দ্রীয় বড় জামে মসজিদের সরকারী অনুদান ও সম্পদ আত্মসাতের অভিযোগে পটুয়াখালী সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালত, দুদক, মহাপরিচালককে (তদন্ত ও অনুসন্ধান) তদন্তের নির্দেশ দেন।
এ বিষয়ে সাবেক প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুবুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন , ’আমার বিরুদ্ধে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিচ্ছে আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা। এটি এক ধরনের রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন, যাতে আগামী নির্বাচনে আমি দলীয় মনোনয়ন না পাই।