সুনামগঞ্জে সংঘর্ষে ৪ জনের মৃত্যু, ‘পরিকল্পনাকারীকে’ বিমান থেকে গ্রেফতার
দোয়ারাবাজার(,সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ
সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলায় মসজিদের কাঁঠাল নিলামে বিক্রি করা নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষে চারজন জন নিহতের ঘটনার ‘পরিকল্পনাকারী’ এবাদুল হককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার (১১ জুলাই) রাতে সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের একটি ফ্লাইটে দুবাই যাওয়ার সময় তাকে আটক করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে শান্তিগঞ্জ থানার ওসি মো. খালেদ চৌধুরী বলেন, ‘সংঘর্ষের ঘটনার মূল পরিকল্পনাকারী এবাদুল হক মঙ্গলবার রাতে দুবাইগামী একটি বিমানে ওঠেন। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশের একটি দল অভিযান চালিয়ে তাকে বিমান থেকে আটক করে শান্তিগঞ্জ থানায় নিয়ে এসেছে। বুধবার দুপুরে তাকে আদালতে হাজির করে রিমান্ডের আবেদন করবে পুলিশ।’
খালেদ চৌধুরী আরও বলেন, ‘তাকে পুলিশ হেফাজতে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। হত্যাকাণ্ডের মূল কারণ ও আর কারা ঘটনায় জড়িত সেসব তথ্য তার কাছে জানতে চাইছে পুলিশ।’
ওসি বলেন, ‘ঘটনার পর থেকে ওই এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। অভিযান চালিয়ে উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজনকে আটক করেছে পুলিশ। এবাদুল হকের ভাই মইনুল হোসেন যাতে পালিয়ে যেতে না পারে, সেজন্য সব ইমিগ্রেশনে বার্তা পাঠানো হয়েছে। সরাই মরল ও মালদর গোষ্ঠীর বিরোধ দীর্ঘদিনের। এর মধ্যে এবাদুল ও তার ভাই মইনুল মালদর গ্রুপের সদস্য।’
পুলিশ ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হাসনাবাদ গ্রামের মসজিদে গত শুক্রবার জুমার নামাজের পর এক ব্যক্তির দান করা একটি কাঁঠাল নিলামে বিক্রি করা হয়। স্থানীয় এক ব্যক্তি ওই কাঁঠাল ২৫০ টাকায় কিনে নেন। পরে আরেকজন এসে সেটি এক হাজার টাকা দাম দেবেন বলেন। এ নিয়ে দুই জনের মধ্যে তর্কাতর্কি শুরু হয়। পরে তাদের শান্ত করে বিদায় দেন এলাকাবাসী। এ নিয়ে রবিবার বিকালে সরাই মরল গ্রুপের শহিদুল ইসলাম ও মালদর মিয়ার পক্ষের লোকজনের বাগবিতণ্ডা এবং হাতাহাতি হয়। এ ঘটনার জেরে সোমবার সকালে দুই পক্ষের লোকজনের আবারও সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় দুই পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। সংঘর্ষে দুইপক্ষের চারজন নিহত হন। তারা হলেন- নিহতরা হলেন- হাসনাবাদ গ্রামের আব্দুল লতিফের ছেলে নুরুল হক (৪৫), আব্দুস সুফির ছেলে বাবুল মিয়া (৫০), আব্দুল বাসিরের ছেলে শাহজাহান মিয়া (৫৫) এবং হাসনাবাজ গ্রামের আছির মাহমদের ছেলে মুখলেছুর রহমান (৬০)।
পুলিশ সূত্র জানায়, হাসনাবাদ গ্রামে দুই পক্ষের গোষ্ঠীগত দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। তাদের মধ্যে আগেও মারামারি, হামলা, মামলার ঘটনায় একাধিক সালিস হয়েছে। এসব ঘটনা মীমাংসা হলেও বিরোধ, ক্ষোভ যায়নি দুই পক্ষের। যে কারণে সামান্য এক কাঁঠালের নিলাম নিয়ে তর্কাতর্কির পর পেছনের পুরনো বিরোধ সামনে আসে। কাঁঠাল ইস্যু রূপ নেয় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে। মারা যান চারজন।