সৈয়দপুরে সাংবাদিক হক’র বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ ভাঙ্গাড়ি লোহার ব্যবসায়ী আজিমের
স্টাফ রিপোর্টার :
রংপুর থেকে প্রকাশিত দৈনিক দাবানল পত্রিকার নীলফামারী জেলা প্রতিনিধি মোতালেব হোসেন হক’র বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ করেছে মো. আজিম নামে সৈয়দপুর শহরের ভাঙ্গাড়ি লোহা লক্করের এক ব্যবসায়ী। বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) সকালে তিনি এই লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে।
অভিযোগে উল্লেখ করেছেন যে, আমি একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। সৈয়দপুর শহরেই আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। পুরাতন লোহা লক্কড় ও ভাঙ্গাড়ি মালামাল ক্রয়-বিক্রয় করি। সেই সুবাদে সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার বিভিন্ন লৌহজাত পরিত্যক্ত সামগ্রীও কিনি। সরকারী লাইসেন্সধারী ঠিকাদাররা বৈধভাবেই টেন্ডারের মাধ্যমে রেলওয়ের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ ও অপকাটিং জিনিসপত্র নিয়ে আমার কাছে বিক্রি করেন। তাঁদের কাছ থেকে ওইসব মাল নিয়মমাফিক নিই।
দীর্ঘ দিন থেকে এই ব্যবসা করে আসছি। কখনই কোন সাংবাদিক বা প্রশাসনসহ কর্তৃপক্ষ বা ব্যক্তিবর্গ আমার এই বৈধকাজে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেনি। কিন্তু মোতালেব হোসেন হক নামে এক ব্যক্তি সাংবাদিক ও রাজনৈতিক নেতা পরিচয়ে প্রায়ই বিরক্ত করেন। নিয়মতান্ত্রিকভাবে কেনা রেলওয়ের মালামালকে চোরাই ও অবৈধ পন্থায় সংগ্রহ করার মিথ্যে ও অযৌক্তিক অভিযোগ এনে ব্লাকমেইল করার অপচেষ্টা চালান।
তার কথায় চাঁদা দিতে রাজি না হওয়ায় ভূয়া অভিযোগে আমাকে জড়িয়ে সোশ্যাল মিডিয়াসহ তার অখ্যাত পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ করেছে। এর মাধ্যমে আমাকে সামাজিকভাবে হেয় করেছে। ব্যক্তি বিশেষকে টার্গেট করে তার এমন ষড়যন্ত্রমূলক অপপ্রয়াসের শিকার হয়েছেন অনেকেই।
ইতোপূর্বেও সে লেখালেখির মাধ্যমে সামাজিকভাবে মানহানি ঘটানোর ভয় দেখিয়ে লোকজনের কাছে মোটা অংকের চাঁদা দাবি করে। না দেওয়ায় সৈয়দপুরের অনেক বিশিষ্ট জনের নামেও আক্রোশমূলক ভিত্তিহীন, মনগড়া, গাঁজাখুরি কথা লিখে অপপ্রচার চালিয়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে। অনেক সময় ৭১ টিভি, একুশে টিভিসহ বিভিন্ন মিডিয়ারও নাম উল্লেখ করে।
অথচ প্রকৃত অর্থে চোরাই লোহা কারবারী সিন্ডিকেট এবং মাদকসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িতদের সাথে সখ্যতা ও লেনদেনের মাসিক কন্টাক্ট থাকায় সেই অপরাধ চক্রের বেআইনি কর্মকাণ্ড নিয়ে সে কখনই কলম ধরেনা। এমনকি মানবিক আবেদন, সামাজিক সমস্যা সম্ভাবনা, সরকারী উন্নয়ন, শিল্প-বানিজ-কৃষির সমৃদ্ধি, প্রতিভা ও নৈপুণ্য বিকাশ বিষয়ে তার কোন সংবাদ নেই।
মূলতঃ অপসাংবাদিকতায় লিপ্ত হয়ে সে চাঁদাবাজি ধান্দাবাজি করে অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছে। অনেকক্ষেত্র অন্য সাংবাদিকদের নাম করেও টাকা হাতিয়ে নিয়ে আত্মসাৎ করেছে। এভাবে সাংবাদিকতার মত মহান পেশাকে কলুষিত ও বিতর্কিত করেছে।
তার নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের ফলে বেশ কিছু এনজিও কর্তৃক দেওয়া নিয়মিত মাসিক ত্রাণ সহায়তা এবং ঈদ উপহার, চিকিৎসা ও শিক্ষা সহায়তা থেকে হা হাজার দরিদ্র মানুষ বঞ্চিত হয়েছে।
এহেন নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের কারণে বিভিন্ন সময় গণধোলাই, লাঞ্ছনা ও মামলার শিকার এবং বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশ হলেও সাংবাদিকরা তার পক্ষে অবস্থান নেয়নি। পেশাদারীত্ব না থাকায় আজও কোন সাংবাদিক সংগঠনের সদস্য হতে পারেনি। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ব্যবসায়ী, রাজনীতিবিদের করা বেশ কয়েকটা মামলা চলমান। স্থানীয়, আঞ্চলিক ও জাতীয় পত্রিকায় তার অপকর্মের অনেক সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
হিনস্বার্থ চরিতার্থ করতে সম্মানহানির এই অপতৎপরতার মাধ্যমে সে যেন আর কোন সম্মানী ব্যক্তিকে অপমানিত করার অপপ্রয়াস চালাতে না পারে সেজন্য তার বিরুদ্ধে তদন্ত পূর্বক দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন করেছি। অনুলিপি রেলওয়ে কারখানার ডিএস, উপজেলা চেয়ারম্যান, সৈয়দপুর থানার ওসি কে দিয়েছি। এরপরও যদি সে তার অনৈতিক কার্যকলাপ বন্ধ না করে তাহলে আইনগত ব্যবস্থাও নিবে বলে জানান অভিযোগকারী আজিম।
উপজেলা চেয়ারম্যান মোখছেদুল মোমিন বলেন, হক কোন সাংবাদিক নয়। সে একজন চিহ্নিত চাঁদাবাজ। তার অপকর্মের খেসারত দিতে হচ্ছে সৈয়দপুরবাসীকে। উন্নয়নকাজ বন্ধ হয়েছে তার মিথ্যাচারে। অসাধু কর্মকর্তা আর দূর্নীতিবাজ ব্যক্তিদের সাথে যোগসাজশে সে নানা অবৈধ কারবার করে চলেছে। আজিমের অভিযোগের শতভাগ সত্যতা রয়েছে। সৈয়দপুর শতকরা ৯৯ ভাগ মানুষ এখন আর তার সংবাদকে বিশ্বাস করেনা। কারণ তার প্রতারণামুলক কার্যকলাপ আজ সবার কাছে প্রকাশ হয়ে পড়েছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফয়সাল রায়হান বলেন, এসংক্রান্ত কোন আবেদন এখনও আমার হস্তগত হয়নি। অফিসে জমা দিয়ে থাকলে অবশ্যই পাবো। তখন বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এব্যাপারে সাংবাদিক মোতালেব হোসেন হক’র সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, আইন অনুযায়ী রেলওয়ে কারখানার আশেপাশে ৩০ কিলোমিটার এলাকায় কোন ভাঙ্গাড়ির দোকান থাকতে পারবেনা। অথচ সৈয়দপুরে অসংখ্য দোকান। আইনমতে এগুলো সব অবৈধ। তাই এগুলোর মালামাল ও কারবারীরাও অবৈধ। তাছাড়া আজিম একজন চোরাই লোহা ব্যবসায়ী। তার কাছে চাঁদা চাওয়ার প্রশ্নই উঠেনা। এর আগের যাদের বিরুদ্ধে নিউজ করেছি তারাও একই অভিযোগ করেছেন। কিন্তু কেউইতো প্রমাণ করতে পারেনি। আসলে এমন অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যে। নিজেদের অপরাধ ঢাকতে সাংবাদিককে দোষারোপ করাই একটা অপকৌশল। সেটাই সবাই প্রয়োগ করছে।