তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়নে নভেম্বর পর্যন্ত সময় দিল ইবি শিক্ষার্থীরা
ইবি প্রতিনিধি:উত্তরবঙ্গের স্থায়ী বন্যা সমস্যার সমাধান ও তিস্তা মহাপরিকল্পনা দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে মশাল মিছিল করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা।
শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া মোড় থেকে মশাল হাতে শিক্ষার্থীরা মিছিল শুরু করে। পরে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে প্রধান ফটকের সামনে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন তারা।
মিছিলে শিক্ষার্থীরা স্লোগান দেন— “জাগো বাহে কোনঠে সবাই”, “উত্তরবঙ্গের কান্না, আর না, আর না”, “ভারত যদি বন্ধু হও, ন্যায্য পানির হিস্যা দাও”, “তিস্তা পাড়ের সাথে, ইবিয়ানরা আছে”— এসব শ্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, উত্তরবঙ্গ বাংলাদেশের অন্যতম শস্যভান্ডার হলেও দীর্ঘদিন ধরে বৈষম্যের শিকার। তারা অভিযোগ করেন, রাজনৈতিক স্বার্থে বিগত সরকারগুলো তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়নি। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর ইন্টেরিম সরকারের কাছ থেকে পরিবর্তনের প্রত্যাশা থাকলেও দেড় বছর পার হয়ে গেলেও প্রকল্পের কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি। শিক্ষার্থীরা নভেম্বরের মধ্যেই তিস্তা প্রকল্পের কাজ শুরু করার দাবি জানান।
ইবি ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মাহমুদুল হাসান বলেন, “প্রতিবছর উত্তরবঙ্গের মানুষ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। ঘরবাড়ি নদীতে বিলীন হয়ে যায়। এখনই পদক্ষেপ না নিলে এ অঞ্চলের মানুষ আরও ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি হবে।”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবির সাবেক সহ-সমন্বয়ক গোলাম রব্বানী বলেন, “আমরা প্রতিবছর ইবি থেকে বন্যার্তদের সহায়তা করতে যাই, কিন্তু সমস্যার স্থায়ী সমাধান হয় না। একমাত্র উপায় তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন।”
একই সংগঠনের সাবেক সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, “তিস্তা আন্দোলন কোনো সাময়িক দাবি নয়, এটি উত্তরবঙ্গবাসীর বহু দশকের সংগ্রাম। ৪৫ বছর ধরে এই আন্দোলন চলছে। ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন ঘটেছিল তিস্তা আন্দোলনের শহিদ আবু সাইদের রক্তের বিনিময়ে, অথচ এখনো সেই উত্তরবঙ্গই অবহেলিত।”
তিনি আরও বলেন, “ড. ইউনুস সরকার ক্ষমতায় এসে উত্তরবঙ্গের উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, কিন্তু তা বাস্তবায়ন হয়নি। নভেম্বরের মধ্যে তিস্তা প্রকল্পের কাজ শুরু না হলে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সারা দেশের শিক্ষার্থীদের নিয়ে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।”