সুন্দরগঞ্জে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রের পরিত্যক্ত টাংকিতে মিললো আগুনে পোড়া লক্ষাধিক টাকার সরকারি ঔষধ:
স্টাফ রিপোর্টার
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ৮ নং ধোপাডাঙ্গা ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান কেন্দ্রটি বর্তমানে পরিত্যাক্ত ও জরাজীর্ণ অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে।সরকারের সেবামূলক প্রতিষ্ঠানটি থেকে সুবিধা বঞ্চিত হচ্ছে গ্রামের সাধারণ মানুষ।সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,
এই ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমল্পেক্সটির নির্মাণসম্পূর্ণ ২টি ভবন রয়েছে, ১টি কোয়াটার অন্যটি কমপ্লেক্স ভবন। তবে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চতুরদিকে ময়লার ভাগার লক্ষ্য করা গেছে।
আরো দেখা গেছে, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সৌচাগারের ট্যাংকিতে কয়েক লাখ টাকার সরকারী ঔষধ চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের না দিয়ে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে।
এই দায়ভার কে নেবে। স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রে টানিয়ে দেয়া ব্যানারে দেখা যায়, কমপ্লেক্সে কর্মরত রয়েছেন ৩ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী। এরা হলেন, উপ-সহকারী মেডিকেল অফিসার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মোঃ দিদারুল ইসলাম, পরিবার কল্যান পরিদর্শিকা মোছাঃ নুর জাহান বেগম, নৈশ্য প্রহরী মোঃ মোসলেম উদ্দিন।
খবর নিয়ে জানা গেছে, তালিকাভুক্ত ৩ জন কর্মকর্তা কর্মচারীর মধ্যে ডাঃ দিদারুল ইসলাম বদলি হয়েছেন, একজন স্বাস্থ্য কর্মী অবসরে গেছেন। বর্তমানে নৈশ্য প্রহরী মোসলেম উদ্দিনই চালাচ্ছেন ধোপাডাঙ্গা পরিবার পরিকল্পনা কল্যান কেন্দ্রটি।
এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ফাঁকা মাঠে গোল দিতে ব্যাস্ত উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সেকেন্দার আলী। একেই বলে প্রদীপের নিচে অন্ধকার।ধোপাডাঙ্গা ইউনিয়নে পরিবার পরিকল্পনা, মা ও শিশু-স্বাস্থ্য সেবা ও পরামর্শদানকারী মাঠ কর্মকর্তা/কর্মচারীগণের তথ্যে জানা যায়, পরিবার
পরিকল্পনা পরিদর্শকের দায়িত্বে রয়েছেন মোঃ জোহা মিয়া, পরিবার কল্যান সহকারী জাহানারা বেগম, পরিবার কল্যান সহকারী মোছাঃ আনোয়ারা খাতুন, পরিবার কল্যান সহকারী মোছাঃ রাবেয়া খাতুন, পরিবার কল্যান সহকারী রাবেয়া বেগম, পরিবার কল্যান সহকারী মোছাঃ দিলরুবা আক্তার জাহান।
ঔষধ আগুনে পুড়িয়ে ফেলার ও রোগীর তালিকার বিষয়ে জোহা মিয়ার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমাদের কাজ অফিসে বসে মিটিং করা, এর বাহিরে কোন তথ্য রাখার দায়িত্ব নয়।ঔষধ আগুনে পুড়িয়ে ফেলা ও সেবা নিতে আশা রোগীর তালিকা নিতে হলে ডাঃ মিজানুর রহমান ও উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কাছে নিতে হবে।
অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনকারী ডাঃ মিজানুর রহমান বলেন, আমি সপ্তাহের প্রতি মঙ্গলবার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগী দেখি। দায়িত্বপ্রাপ্ত চিকিৎসকের ব্যাপারে তার কাছে জানতে চাইলে তিনি সুন্দরগঞ্জ উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার সাথে কথা বলতে বলেই তিনি ফোন কেটে দেন।
এদিকে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোঃ সেকেন্দার আলী জানান, বিষয়গুলো আমার নজরে ছিলনা আর আমি এখন কাজে ব্যাস্ত আছি কি বলবেন তারাতারি বলেন রোগীদের দেয়া ঔষধ পুড়িয়ে ফেলা ও নামমাত্র কর্মকর্তা দিয়ে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র পরিচালনার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ফোন কেটে দিয়ে বন্ধ করে রাখেন।
এব্যাপারে ধোপাডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোখলেছুর রহমান মন্ডলের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, সরকারি সেবাদান প্রতিষ্ঠান স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্র থেকে আমার নির্বাচনি এলাকার সাধারণ মানুষ সুবিধা বঞ্চিত হোক সেটা আমি চেয়ারম্যান হিসেবে কোন ভাবেই মেনে নিতে পারছিনা।
এই স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানে অসহায় গ্রামের রোগীদের জন্য বরাদ্দকৃত সরকারি ঔষধ সাধারণ মানুষের মাঝে না দিয়ে বহিরাগত ফার্মিসিতে বিক্রয় বা আগুনে পুড়িয়ে দেয়ার বিষয়টি অত্যান্ত দুঃখজনক এবং দন্ডনীয় অপরাধ। অবিলম্বে বিষয়টি উপজেলা ঔষধ প্রশাসন কতৃক তদন্ত করে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।