
বিলাল হুসাইন,চিফ রিপোর্টার:ঢাকা, রবিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৫:
ভূমি নিবন্ধন ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীনে হওয়া উচিত, ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এএসএম সালেহ আহমেদ বলেছেন। জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সুপারিশের আলোকে সহজ ভূমি পরিষেবা প্রদানের জন্য নিবন্ধন-সম্পর্কিত কার্যাবলী ভূমি মন্ত্রণালয়ের আওতায় আনার লক্ষ্যে আজ ভূমি মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত এক সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
সিনিয়র সচিব বলেন, বাংলাদেশে ভূমি ব্যবস্থাপনা দীর্ঘদিন ধরে জটিলতা এবং জনদুর্ভোগের প্রতীক হিসেবে পরিচিত। ভূমি সম্পর্কিত জটিলতার একটি বড় কারণ হলো ভূমি প্রশাসন এবং ভূমি নিবন্ধনের দ্বৈত নিয়ন্ত্রণ। বর্তমানে ভূমি প্রশাসন ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীনে হলেও, ভূমি নিবন্ধন কার্যক্রম আইন মন্ত্রণালয়ের অধীনে পরিচালিত হয়। এই বিভাগ প্রশাসনিক অসঙ্গতি তৈরি করেছে এবং ভূমি ব্যবস্থাপনাকে আরও কঠিন করে তুলেছে।
তিনি বলেন, “আমরা সকলেই জনগণের জন্য কাজ করি, তাই জনগণের দুর্ভোগ লাঘবের জন্য আমাদের সকলকে একসাথে কাজ করতে হবে। এখানে কোন মন্ত্রণালয় কাজ করছে তা গুরুত্বপূর্ণ নয়, গুরুত্বপূর্ণ হলো আমরা জনগণকে কতটা সেবা দিতে পেরেছি। ভূমি নিবন্ধন মূলত ভূমি ব্যবস্থাপনার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। ভূমির মালিকানা হস্তান্তর, দলিল সম্পাদন, নিবন্ধন এবং খতিয়ান সংশোধন – এই সবই একই ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার অংশ। তবে, যখন এই একই প্রক্রিয়ার দায়িত্ব বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের হাতে থাকে, তখন তথ্যের সমন্বয় ব্যাহত হয়, সিদ্ধান্ত গ্রহণ বিলম্বিত হয় এবং দুর্নীতির সুযোগ বৃদ্ধি পায়।”
তিনি আরও বলেন, ভূমি নিবন্ধন ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীনে আনা হলে, একটি একক কর্তৃপক্ষ এবং সমন্বিত ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে। এর ফলে ভূমি-সম্পর্কিত সমস্ত তথ্য এক প্ল্যাটফর্মে সংরক্ষণ এবং যাচাই করা সহজ হবে। ডিজিটাল ভূমি ব্যবস্থাপনা বাস্তবায়নও আরও কার্যকর হবে। একই সাথে, দলিল জালিয়াতি, দ্বিগুণ নিবন্ধন এবং দলিলপত্রে অসঙ্গতি অনেকাংশে হ্রাস পাবে। বর্তমানে দেখা যাচ্ছে যে এক টুকরো জমি কেনার পর মালিকানা নিশ্চিত করতে বছরের পর বছর সময় লাগে। ভূমি নিবন্ধন যদি ভূমি মন্ত্রণালয়ের সরাসরি তত্ত্বাবধানে হয়, তাহলে এক ছাতার নিচে সেবা প্রদানের মাধ্যমে জনদুর্ভোগ কমানো সম্ভব। যদি ভূমি সংক্রান্ত সকল কার্যক্রমকে একটি সমন্বিত কাঠামোর আওতায় আনা হয়, তাহলে ভূমি নিবন্ধন ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীনে স্থাপন করলে ভূমি ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা ফিরে আসবে এবং দুর্নীতি হ্রাস পাবে।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এএসএম সালেহ আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় ভূমি সংস্কার বোর্ডের চেয়ারম্যান (সচিব) এজেএম সালাউদ্দিন নাগরী, ভূমি আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান (গ্রেড-১) ড. মো. মাহমুদ হাসান, মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।








