সাব্বির আলম বাবু বিশেষ প্রতিনিধিঃ
সাগরে জেলেদের জালে ধরা পরছে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ। পেটে ডিম না আশায় মা ইলিশ রক্ষায় দেয়া নিষেধাজ্ঞা পিছানোর দাবি জেলেসহ আড়ৎদারদের। একই ভাবে সমন্বয়হীন অবরোধের ফলে ভারতের জেলেরা লাভবান হবে বলে মনে করছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
দ্বীপ জেলা ভোলা মেঘনা-তেতুঁলিয়া নদী বেষ্টিত। সাগর মোহনার জেলাটিতে কয়েক লাখ জেলে ইলিশ শিকারের উপর নির্ভর করে। মৌসুমের শুরুতে আশানুরূপ ইলিশ না পাওয়ায় হতাশা দেখা দিয়েছিলো জেলেদের মধ্যে।
এ কারণেই দীর্ঘ দিনের হতাশা কাটিয়ে হাসি ফুটেছে অসহায় জেলেদের মুখে। যেমন জেলার সর্বদক্ষিণে সামরাজ ইলিশ মাছঘাট। দেশের দ্বিতীয় সর্ববৃহৎ এই মাছঘাটে বড় দুটি ইলিশ হাতে নিয়ে প্রাণ জুড়ানো হাসি বলে দিচ্ছে,শেষ সময় হলেও জেলেদের মুখে হাসি ফুটেছে।
ইলিশ হাতে নিয়ে জেলের মুখের হাসি বলে দিচ্ছে সব। ধরা পরছে জেলেদের জালে ইলিশ। তবে মেঘনা নয় ইলিশ পাচ্ছে সাগরের জেলেরা। জেলার সর্বদক্ষিণ চরফ্যাশনের সামরাজ মাছ ঘাটে ইলিশ বিক্রির হাঁকডাকের ফলে প্রাণ চাঞ্চল্য ফিরেছে এসব ঘাটে।
সূর্য উঠার সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয় মাছ বিক্রির হাঁকডাক। আর ট্রলার থেকে ইলিশ নামিয়ে বিক্রি হয় এই মাছ ঘাটে। তবে আকারে ছোট ইলিশ পাওয়ার কথা জেলেরা তুলে ধরে বলেন, অন্তত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে অবরোধ দিলে তখন ডিম আসতো ইলিশের পেটে এবং দামেও অনেকটা সস্তা হত।
জেলে মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, প্রচুর ইলিশ ধরা পরেছে জালে। তবে আকারে ছোট। যে কারণে দাম বেশি পাওয়া যাচ্ছে না। একটি ট্রলারের মাঝিমাল্লারা অন্তত ৩৫ মণ ইলিশ পেয়েছে। তাতে বেশ খুশি। দৌলতখানের অপর একটি ট্রলারের ৮৬ মণ ইলিশ পেয়ে সরাসরি চাঁদপুর নিয়ে গেছে।
সেখানে বিক্রি করেছে ৩৯ লাখ টাকা। এভাবে কমবেশি প্রতিটি ট্রলার ইলিশ পাচ্ছে বলেই নিশ্চিত করলেন সামরাজ মাছঘাটের আড়ত মালিক সমিতির সহ-সভাপতি মো. সেলিম। তার মতে আগের চেয়ে এখন বেশ ভালোই ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে,তবে মাছের পেটে ডিম এখনো আসেনি।
সে ক্ষেত্রে অবরোধটা আরো কিছুদিন পিছিয়ে দিলে ভালো হত। মা ইলিশ রক্ষায় দেয়া নিষেধাজ্ঞাকে স্বাগত জানিয়ে আড়তদার মো. তোফায়েল আহম্মেদ বলেন, সাগরে প্রচুর ইলিশ ধরা পরছে। কেউ পাচ্ছে ৩৫ মণ আবার কেউ পাচ্ছে ৮৬ থেকে শত মণ ইলিশ।
এসব ইলিশ আকারে খুবই ছোট। পেটে নেই কোন ইলিশের। বেশির ভাগ ইলিশে একই অবস্থা। একই সাথে ভারতের সাথে মিল করে মা ইলিশ রক্ষা নিষেধাজ্ঞা দেয়ার দাবী। কারণ বাংলাদেশে বন্ধ থাকলেও ভারতের জেলেরা ইলিশ ধরে নিচ্ছে। এর ফলে সরকারের মা ইলিশ রক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হবে।
আগামী ১২ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত ২২দিন মা ইলিশ রক্ষা কার্যক্রম। এই ২২ দিন মা ইলিশ রক্ষায় সকল ধরনের মাছ ধরা, পরিবহন, সংরক্ষণসহ সকল ধরনের কার্যক্রম বন্ধ করেছে মৎস্য অধিদফতর। এ বিষয় জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোল্লা এমদাদুল্যাহ বলেন, জলবায়ুর প্রভাবে ইলিশ মেঘনায় কম ধরা পরছে। তবে সাগরে ইলিশ রয়েছে উল্লেখ করে বলেন, সরকারি ভাবে ১ লাখ ৯২ হাজার মেট্রিকটন ইলিশের উৎপাদন নির্ধারণ করা হয়েছে তা সফল হবে।