জাফরুল সাদিক,বগুড়া ঃ
বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে গত ২০ বছর ধরে যমুনাপাড়ের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসছে লাইফবয় ফ্রেন্ডশিপ ভাসমান হাসপাতাল। মাত্র ৫ টাকার টিকিটে রোগের ব্যবস্থাপত্র, ঔষধ এবং প্রয়োজনে অপারেশন সুবিধা পাচ্ছে পিছিয়ে পরা চরবাসী। এ ভাসমান হাসপাতালটি এখন অবস্থান করছে বগুড়া
সারিয়াকান্দির কর্ণিবাড়ি ইউনিয়নের দেবডাঙ্গা স্পারের সামনে যমুনা নদীর তীরে। গত ২০০২ সালে এটির যাত্রা শুরু হয়।সারাদেশে ২ টি হাসপাতাল এ ধরনের সেবা চালু রেখেছে চরবাসীদের জন্য। অন্যটি এখন কুড়িগ্রাম জেলায় অবস্থান করছে বলে জানিয়েছেন এর কর্তৃপক্ষ। এটি এখন বগুড়া, সিরাজগঞ্জ এবং জামালপুরের জেলার যমুনাচরে বসবাসরত সুবিধা বঞ্চিত
মানুষের স্বাস্থ্যসেবায় কাজ করে যাচ্ছে। ভাসমান এ হাসপাতালে গাইনী, দাঁত, সাধারণ এবং চক্ষু বিষয়ে চিকিৎসাসেবা দেয়া হচ্ছে। এখানে প্রতিদিন গড়ে ১৫০ থেকে ২০০ জন রোগি চিকিৎসাসেবা এবং বিনামূল্যে ওষুধ গ্রহণ করছেন।প্রয়োজনে চোখ, গাইনী এবং অর্থোপেডিক্স বিষয়ে অপারেশন করা হচ্ছে বিনামূল্যে। এখানে চিকিৎসা নিতে হলে ভোরে ৫ টাকা দিয়ে একটি টিকিট করতে হবে।
যে টিকিটে সকাল ৯ টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন ডাক্তাররা। এখানে সাধারণত চক্ষু চিকিৎসার উপরে বেশি জোড় দেয়া হয়। নদী পাড়ের খোলা জায়গায় টিনের বেড়া আর ছাউনি দিয়ে তৈরি অস্থায়ী ক্যাম্পে নারী ও পুরুষের থাকার পৃথক দুটি ঘর আছে। অস্ত্রোপচারের রোগিরা প্রয়োজন অনুযায়ী কয়েক দিন সেখানে থাকেন। এখানে বিনামূল্যে অসহায়দের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়।
আফরোজা বেগমের সাথে। তিনি দীর্ঘদিন ধরেই পীঠের হাড়ের ব্যাথায় ভুগছিলেন। টাকার অভাবে তিনি চিকিৎসা নিতে পারেননি। তাই এ হাসপাতালে তিনি এসেছিলেন বিনামূল্যে চিকিৎসা নিতে। তিনি বলেন, মাত্র ৫ টাকা দিয়ে ওষুধ নেকে নিছি, আবার সেই ওষুধ বিনা টাকাতেই পাছি। হামার খুবই এডা উপকার হলো।
হাসপাতালের এডমিনিস্ট্রেটর শাহ আলম জানান, এখানে বিনামূল্যে প্রজনন স্বাস্থ্য পরিচর্যা, মাতৃত্বজনিত সেবা, শিশুস্বাস্থ্য পরিচর্যা, দাঁতের চিকিৎসা, অস্ত্রোপচার, এক্সে, ইসিজিসহ সব ধরনের প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা করা হয়। বিভিন্ন সময় অনেক দেশ থেকে আসেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।
হাসপাতালের প্রোগ্রাম ম্যানেজার ডা: শাফিউল আজম জানান, চরাঞ্চলের খেটে খাওয়া মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। চিকিৎসাসেবা তাদের জন্য অত্যন্ত জরুরি। নদীপাড়ের মানুষ প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে লড়াই সংগ্রাম করে বেঁচে থাকেন। হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক, নার্স ও কর্মিদের ত্যাগ এবং ইউনিলিভারের পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত হাসপাতালটি হয়ে ওঠে দুঃসময়ের বন্ধু, মানুষের আস্থ