জানুয়ারি কম.অমল সেনের ২১তম মৃত্যু বার্ষিকী
এস, এম মুসতাইন, নিজস্ব প্রতিবেদক :
মুক্তিযুদ্ধের অগ্রণী সংগঠক, তেভাগা আন্দোলনের বিপ্লবী নেতা, কৃষকের ন্যায্য অধিকার আদায়ের ভুমিকায় উপমহাদেশের কমিউনিস্ট নেতৃত্বে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও সাবেক সভাপতি কমরেড অমল সেন ২০০৩ সালের ১৬ জানুয়ারি ঢাকা বারডেম হাসপাতালে শ্বাস ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ৮৯ বছর বয়সে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন।
১৯১৪ সালের ১৪ জুলাই নড়াইল জেলার আমুড়িয়া গ্রামে মামার বাড়িতে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি আফরা গ্রামের ততকালীন জমিদার বংশের সন্তান হলেও ছোট বেলা থেকে সাধারণ কৃষকের মতো জীবনযাপন করেছেন। নিজের সংসার জীবন সঙ্গীনিতেও না জড়িয়ে একত্ব জীবনযাপনে কাটিয়ে গেছেন। অমল সেন জমিদারিত্ব চাননি, কৃষকের বেশে কাজ করতে চেয়েছেন।
কৃষক পরিবারের খাবার, ঘুমানো কৃষি কাজ এসবই ছিল পছন্দ। তাছাড়া কৃষকের তেভাগার দাবী, লাঙ্গল যার জমি তার, কৃষকের ন্যায্য হিসাব আদায়ের লক্ষে জাতি ধর্ম নির্বিশেষে মৃত্যুর আগপর্যন্ত কাজ করেছিলেন। জমিদারিত্ব না চেয়ে নিজের জমি জায়গা সাধারণ গরীব কৃষকদের মাঝে বিতরণ করে গেছেন। বসুন্দিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রাথমিক পড়ালেখা করেন।
যার ততকালীন নাম ছিলো দি নলিনী বালা মেমোরিয়াল স্কুল। নড়াইল ভিক্টোরিয়া কেলেজে লেখাপড়া শেষ করে বাকড়ী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা শিক্ষকতার পাশাপাশি সাধারণ কৃষকদের কৃষি কাজে উৎসাহ যোগাতেন। ১৯৭১ সালে দেশে যুদ্ধ চলাকালে গ্রামে গ্রামে মুক্তিযুদ্ধাদের সংগঠিত করার লক্ষে কাজ চালিয়ে যেতে অগ্রণী ভুমিকা রেখেছেন।
২০০৩ সালের ১৭ জানুয়ারি বাঘারপাড়া উপজেলার জামদিয়া ইউনিয়নের এগারোখান বাকড়ী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পাশে সমাধি দেওয়া হয়। প্রতিবছর সমাধি স্থলে শ্রদ্ধা জানাতে সমগ্র দেশের কমিউনিস্ট, ওয়ার্কার্স, বাম দলের নেতাকর্মী ভক্ত বৃন্দরা ছুটে আসেন। এসময় মুক্ত আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও স্মরণ মেলার আয়োজন করেন অমল সেন স্মৃতি রক্ষা কমিটি।
এবছর ২১ তম মৃত্যু বার্ষিকীতে বিভক্তির কারনে ভিন্ন ভিন্ন ভাবে ১৬, ১৭, ১৮ ও১৯ জানুয়ারি ৪ দিন ব্যাপি সমাধি স্থলে শ্রদ্ধাঞ্জলি, স্মরণ সভা, আলোচনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে যশোর-নড়াইল স্মৃতি রক্ষা কমিটি।