তীব্র নদী ভাঙনে হুমকিতে মৈনটঘাট
স্টাফ রিপোর্টার:
মিনিকক্সবাজার নামে খ্যাত ঢাকার দোহারের মাহমুদপুর ইউনিয়নের মৈনটঘাটে তীব্র নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে। বর্ষা আসতে না আসতেই ভাঙতে শুরু করেছে বহুল পরিচিত মিনি কক্সবাজার নামে খ্যাত এই পর্যটন এলাকা।
প্রতিদিনই ভাঙছে এলাকার কৃষি জমিসহ বিভিন্ন স্থাপনা। ভাঙনের ফলে আতঙ্কে রয়েছেন ঘাটের ব্যবসায়ীসহ স্থানীয়রা।এরইমধ্যে কয়েকটি দোকান ও স্থাপনা বিলিন হয়ে গেছে পদ্মানদীগর্ভে। হুমকিতে রয়েছে মৈনটঘাট জামে মসজিদ, দোকানপাট, লঞ্চঘাটসহ বিভিন্ন স্থাপনা। এর আগে বিগত সময়ে পদ্মার ভাঙনে অনেক অসহায় পরিবারের ফসলি জমি, ঘরবাড়ি নদী গর্ভে চলে গেছে।
চলতি মৌসুমে পদ্মায় বেগ বাড়ার ফলে নদীর পাড় ভেঙে যাচ্ছে প্রতিদিন। দোকান পাট নিয়ে চিন্তিত রয়েছেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। মৈনট ঘাট এলাকার তীর সংরক্ষণ ও ভাঙনরোধে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে অচিরেই নদীগর্ভে বিলীন হয়ে দোহারের মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাবে মিনি কক্সবাজার খ্যাত এই পর্যটন এলাকাটি।
এতে বেকার হয়ে পড়বেন কয়েক হাজার ব্যবসায়ী ও শ্রমিক। বাড়বে ভূমিহীন মানুষের সংখ্যা। বন্ধ হয়ে যাবে অসহায় পরিবারগুলো আয়ের পথ। পদ্মার তীরে অসংখ্য ড্রেজারের পাইপ ও বাল্কহেড দিয়ে বালু নেয়ার ফলেও ভাঙনের অনেকটা করণ বলে জানিয়েছেন কয়েকজন ব্যবসায়ী। এসকল বালু ব্যবসায়ীরা স্থানীয় প্রভবশালী ও ক্ষমতাশীন দলের হওয়ায় অনেকে তাদের বিরুদ্ধে কথা বলতে পারেন না।
প্রকাশ্যে এমন ব্যবসা চললেও প্রশাসনের কোন পদক্ষেপ চোখে পরেনি। দোহারের সাংসদ প্রধানমন্ত্রীর শীল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এর উদ্যোগের নয়াবাড়ি,মুকসুদপুর ও নারিশা ইউনিয়নের পদ্মাতীরবর্তী এলকায় ভাঙন রোধে বাধের কাজ শেষ পর্যায়ে। মৈনটঘাট থেকে নারিশা এলকাপর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার বাধের কাজ হাতে নেয়া হলেও এখনো কার্যক্রম শুরু না
হওয়ায় ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে এই তিন কিলোমিটার জুড়ে বসবাস করা নদীপারের মানুষ। প্রশাসনের মাধ্যমে মৈনটঘাট রক্ষায় দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানিয়েছেন সেখানকার ব্যবসায়ী ও স্থানীয় বাসিন্দারা।
এবিষয়ে দোহার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোবাশ্বের আলম জানান, এরই মধ্যে উপজেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে মাননীয় সংসদ সদস্যকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। এবিষয়ে আজ থেকেই কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে।
দোহার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো.আলমগীর হোসেন বলেন, আমরা ১৫ই আগস্ট ঢাকা-১ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য ও প্রধানমন্ত্রীর শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এর সাথে আলোচনা করেছি। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও এখানে কর্মরত সেনাবাহিনীর সাথে কথা বলেছেন।
পরদিন থেকেই ২৮০ কেজি ওজনের জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙণ রক্ষায় কার্যক্রম শুরু হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আমরা এরই মধ্যে মৈনটঘাট এলাকা পরিদর্শন করেছি। পদ্মার চর ড্রেজিং করে কেটে দিলে পানির তীব্রতা কমে যাবে। এখানে সার্বক্ষণিক উপজেলা প্রশাসনসহ স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও আওয়ামীলীগের কর্মীরা কাজ করে যাচ্ছেন।