সালথায় ফসলি জমিতে মাটি কাটার দায়ে একজনকে কারাদণ্ড ও দুই জনকে জরিমানা
আবু নাসের হুসাইন, ফরিদপুর প্রতিনিধি:
ফরিদপুরের সালথায় সোনালী আশ পাট, পেঁয়াজ ও আমন ধানের জমির উর্বর মাটি কেটে পুকুর খনন এবং মাটি বিক্রি করা নিয়ে বিভিন্ন অনলাইনে সংবাদ প্রকাশের মাত্র কয়েক ঘণ্টার মাথায়ই অভিযান চালিয়ে একজন মাটি ব্যবসায়ীকে এক মাসের কারাদন্ড ও দুই জনকে ৭৫ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমান আদালত। এ সময় দুটি ভেকু মেশিনও আটক করা হয়েছে।
আজ রবিবার (২৯ জানুয়ারি) বিকালে উপজেলার বল্লভদী ইউনিয়নে এ অভিযান পরিচালনা করেন ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক সালথা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. সালাহউদ্দীন আইয়ুবী।
ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. সালাহউদ্দীন আইয়ুবী বলেন, ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে তা ইটভাটায় বিক্রির সংবাদ পেয়ে বল্লভদী ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে অভিযান চালানো হয়। এ সময় ফসলি জমির উর্বর মাটি কেটে বিক্রির অপরাধে নাসির উদ্দীন নামে এক
মাটি ব্যবসায়ীকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করা হয়। এ ছাড়া একই অপরাধে ইদু শেখ নামে আরেক মাটি ব্যবসায়ীকে ৫০ হাজার, জলিল শেখ নামে একজনকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। তিনি বলেন, ঘটনাস্থল থেকে দুটি ভেকু মেশিন আটক করে সংশ্লষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানের জিম্মায় রাখা হয়েছে। ইট প্রস্তত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০১৩ অনুযায়ী তাদের কারাদন্ড ও অর্থদন্ড প্রদান করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আক্তার হোসেন শাহিন বলেন, চলমান বিশ্বের পরিস্থিতে খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে কাজ করে যাচ্ছি আমরা। কৃষি জমির উপরিভাগের মাটি কাটার ফলে কৃষি উৎপাদন ব্যহত হবে। এ বিষয় আমরা সর্বোচ্চ সতর্ক দৃষ্টি রাখছি।
সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে কৃষি সমৃদ্ধ উপজেলা বিনির্মানে আমরা বদ্ধপরিকর। তাই কৃষি জমি ধ্বংস করে পুকুর তৈরি বা মাটি বিক্রির সুযোগ কাউকে দেওয়া হবে না। আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
উল্লেখ, সালথা উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সোনালী আশ পাট, পেঁয়াজ ও আমন ধানের জমির মাটি কেটে পুকুর খনন করা হচ্ছে। আর এসব মাটি বিক্রি করা হতো ইটভাটায় ও রেললাইনে। আবার অনেকে বাড়ির ভিটা তৈরির জন্য মাটি কিনে নেন। এতে দিন দিন আশঙ্কাজনক হারে বিলীন হতে শুরু করেছে
কৃষিজমি। প্রশাসনের নিরবতার কারণে ভূমি আইন অমান্য করে অবাধে অবৈধভাবে ফসলি জমির মাটি বিক্রি করেই চলছে অসাধু মাটিখেকো ব্যবসায়ীরা। এনিয়ে বিভিন্ন অনলাইন পত্রিকায় ফসলি জমিতে পুকুর কেটে মাটি বিক্রি, শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। ওই সংবাদটি প্রশাসনের নজরে এলে রবিবার বিকালেই অভিযান পরিচালনা করে এই জরিমানা করা হয়।