নিজস্ব প্রতিবেদক: পটুয়াখালীর পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকারের নিয়োগকৃত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এএম খোরশেদুল আলম ও প্লান্ট ম্যানেজার শাহ আবদুল মৌলাকে দুর্নীতির দায় নিয়ে পদত্যাগের জন্য ৭২ ঘন্টার আলটিমেটাম দিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে জমি অধিগ্রহনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের দাবী আদায় আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক, ঢাকার তেজগাঁও থানার বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার মো. রবিউল ইসলাম অন্তর। বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পটুয়াখালীর কলাপাড়া প্রেসকাবের ইঞ্জিনিয়ার মো. তৌহীদুর রহমান মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে ১১ দফা দাবী উপস্থাপন করেন তিনি। এসময় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের শতাধিক শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পদত্যাগ না করলে কঠোর কর্মসূচী ঘোষনার কথা বলেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে ঘোষিত ১১ দফা সমূহ হল, ১. দুর্নীতির সাথে জড়িত ফ্যাসিবাদী আওয়ামী সরকারের নিয়োগকৃত মাফিয়া দালাল প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এএম খোরশেদুল আলম ও প্লান্ট ম্যানেজার শাহ আবদুল মৌলাকে দুর্নীতির দায় নিয়ে পদত্যাগ করতে হবে। ২. চুক্তিভিত্তিক ও আউটসোর্সিং এর মাধ্যমে অবৈধ সকল নিয়োগ বাতিল করতে হবে। ৩. বিদ্যুৎ সচিব, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্লান্ট ম্যানেজারের আত্মীয় স্বজনদের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল সহ তাদের অপসারন করতে হবে। ৪. পায়রা তাপ বিদ্যুৎ ও আরএনপিএল বিদ্যুৎ কেন্দ্রে জমি অধিগ্রহনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে বিশেষ অগ্রাধিকার দিয়ে যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকুরী দিতে হবে। ৫. ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের আটকে থাকা জমির টাকা দ্রুত হস্তান্তর করতে হবে। ৬. এলাকার সার্বিক উন্নয়নে ছোট ছোট রাস্তা পাকা বা ইটের সলিং করা, কালভার্ট, বৃক্ষরোপন, মসজিদ, বিনামূল্যে কম্পিউটার প্রশিক্ষন, কার ড্রাইভিং প্রশিক্ষন, মেয়েদের সেলাই মেশিন প্রশিক্ষন ইত্যাদি। ৭. এলাকার উন্নয়নের নামে লুট/আত্মসাত করা টাকা দিয়ে নতুন করে এলাকার উন্নয়নে ব্যয় করতে হবে। এবং লুটপাটে জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে। ৮. স্বপ্নের ঠিকানার আবাসন প্রকল্পের সবাইকে স্থায়ী মালিকানার কাগজ দ্রুত সময়ের মধ্যে দিতে হবে। ৯. এলাকার শিক্ষিত বেকার যুবকদের যোগ্যতার ভিত্তিতে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে। ১০. প্রকল্পের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আত্মীয় স্বজনের মাধ্যমে প্রকল্পের উন্নয়নমূলক কাজ করানো বন্ধ করতে হবে। ১১. বিদ্যুৎ খাত ধ্বংসের সাথে জড়িত খুনী হাসিনা, সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, বিদ্যুৎ সচিব সহ অভিযুক্তদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে হবে।
এর আগে প্রেসকাবের সামনে মানব বন্ধন কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়। এসময় ১১ দফা দাবীর সমর্থনে বক্তব্য রাখেন ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের শিক্ষার্থী শিমুল, ইমরান হোসেন, লিমন, পারভেজ প্রমূখ।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এএম খোরশেদুল আলম ও প্লান্ট ম্যানেজার শাহ আবদুল মৌলা’র বক্তব্য জানতে তাদের ব্যবহৃত মুঠো ফোনে একাধিকবার সংযোগ স্থাপনের চেষ্টা করেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।
প্রসংগত, ২০১৬ সালে পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নে ১৩২০ মোগাওয়াট পায়রা তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করে বিগত আওয়ামীলীগ সরকার। পরবর্তীতে একই ইউনিয়নে স্থাপন করা হয় আরএনপিএল নামে আরও একটি বিদ্যুত কেন্দ্র। এতে নিশানবাড়িয়া, দাসের হাওলা, গরাৎখাঁ, মরিচবুনিয়া ও মধুপাড়া গ্রামের ঘরবাড়ী সহ জমি অধিগ্রহন করা হয় ১৩০ পরিবারের এবং জমি অধিগ্রহন করা হয় আরও ৩১০ পরিবারের। জমি অধিগ্রহনের সময় ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে ঘোষিত পদেক্ষপের মধ্যে ১৩০ পরিবারকে স্বপ্নের ঠিকানা প্রকল্পের আবাসন সুবিধা দেয়া হয় মাত্র। বাকী পদক্ষেপ গুলোর এখনো বাস্তবায়ন করা হয়নি।